মায়াবতী হারিয়ে গেছে
আমার হাসি রোগ আছে,অত্যন্ত সিরিয়াস কথাবার্তাতেও ফিক করে হেসে ফেলি।যে মানুষের সিরিয়াস কথা বলার মাঝে হেসে ফেলি,সেই মানুষ বিরক্ত এবং রাগী চোখে আমার দিকে তাকায়,আমি হাসি থামাতে না পেরে উঠে দূরে যেয়ে হেসে আসি।
ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে আমি প্রিটেস্টে ফিজিক্স সেকেন্ড পেপারে ফেইল করলাম,বারো পেয়েছিলাম।আখতার স্যার খাতা দেয়ার সময় হতাশ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন,খাতা হাতে পাওয়া মাত্র আমি হা হা করে হেসে উঠলাম,হাসতে হাসতে হেঁচকি উঠে যায় এমন অবস্থা,যেনো বারো পাওয়া খুব হাসির একটা ব্যাপার। বাসায় যেয়ে মা খাতা দেখার সাথে সাথেই রেগেমেগে স্টীলের স্কেল দিয়ে আমাকে সপাসপ পেটাতে লাগলেন,মারের ধাক্কায় পড়ে যেয়ে খাটের কোনায় ঠোঁট লেগে ঠোঁট কেটে রক্ত পড়তে লাগলো। ঠোঁটের অবস্থা দেখে মা যত ভয় পেলেন,আমি তত হাসলাম, ঠোঁট কাটার কারনে হেসে অবশ্য সুবিধা করতে পারছিলাম না।
যেদিন বিকেলে অরিন আমাকে বলেছিলো,সে এখন আর আমাকে ভালোবাসতে পারছে না,সেদিনও আমি হেসেছিলাম।হাসতে হাসতে কখন যেনো চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছিলো,শার্টের হাতা দিয়ে চোখ মুছে ফেলার সাথে সাথে ভর্তি হয়ে যাচ্ছিলো পানিতে,আমি অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম।অরিন আস্তে করে "ভালো থেকো" বলে হেঁটে চলে যাচ্ছিলো।আমি ওর যাওয়া
দেখছিলাম।প্রায় পাঁচ ফিট পাচের মতো লম্বা অরিন আস্তে আস্তে ছোটো হয়ে যাচ্ছিলো,ওকে ঝাপসা দেখছিলাম,একসময় অরিন একটা ছোট্ট বিন্দু হয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো।আমি পাগলের মতো হো হো করে হাসতে থাকলাম।
এই মুহূর্তে আমি রিক্সার নিচে গিট্টু মেরে পড়ে আছি,বাম হাত বেকায়দা ভঙ্গিতে রিক্সার চাকার নিচে,আমি রিক্সার নিচ থেকে ওঠার চেষ্টা করছি।রিক্সাওয়ালা আমার গায়ের উপর থেকে রিক্সা তোলার চেষ্টা করছে।নিজেকে কলে আটকে থাকা ইদুর মনে হচ্ছে,বড়ো সড়ো ধেড়ে একটা ইদুর।আমি গলা ফাটিয়ে হাসতে শুরু করলাম।রিক্সাওয়ালা সহ আশেপাশের কিছু লোক আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো।রিক্সাওয়ালা দ্রুত গায়ের উপর থেকে রিক্সা উঠিয়ে ফেললো,আমাকে ধরে ধরে বসালো।পাশ থেকে একজন বলে উঠলো,
-ভাইজান কি মাথায় আঘাত পাইছেন?
-না।বাম হাতে ব্যাথা পেয়েছি।মনে হচ্ছে হাতটা একটা মাংসের দলা,হাড্ডি বলে কোনো কিছুর অস্তিত টের পাচ্ছি না।
বলেই আমি আবার হাসতে লাগলাম।লোকটা সন্দেহের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো।হয়তো ভাবছে পড়ে যেয়ে মাথায় আঘাত লেগে পাগল হয়ে গেছি।ভাবুক,যা খুশি ভাবুক।আমার কিছু আসে যায় না।
আমি ফুটপাথের উপর বসে আছি,রিক্সাওয়ালা রিক্সা নিয়ে চলে গেছে।পাশের এক পেয়ারা মাখানো লোকের কাছ থেকে এক বোতল পানি নিয়েছি।বাম হাতে কোনো সাড় নেই,আরো অনেক জায়গায় কেটেছে,গায়ের শার্টটাও কাধের কাছে ছিড়ে গেছে। আমি তা নিয়ে অবশ্য মোটেও ব্যস্ত নই,হাতে অনেক সময় আছে,আস্তে ধীরে কাজ করা যাক।আপাতত ফুটপাথে হাত পা ছড়িয়ে বসে ঝাল করে পেয়ারা মাখা খাওয়া যাক!
-আপনার এই অবস্থা কেনো?কি হয়েছে?
আমি হাসিমুখে প্রশ্নকারিনীর দিকে তাকালাম।নিরু চোখে মুখে একরাশ উদ্বেগ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
-তেমন কিছু হয় নি,রিক্সা উল্টে পড়ে গেছিলাম।
-এটা তেমন কিছু না?বাম হাত ওরকম করে ভাঁজ করে রেখেছেন কেনো?হাতে ব্যাথা পেয়েছেন?ভেঙে গেছে নাকি?চোখের উপর ফুলে আছে কেনো?ভ্রুর পাশেও তো অনেক খানি কেটে গেছে।উঠুন তো,উঠুন।ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
নিরুর দিকে আমি হাসিমুখে তাকিয়ে থাকলাম,মেয়েটার চোখ প্রবল মায়া মমতায় টনটন করছে।এত মায়া সে কেনো জমা করে রেখেছে আমার জন্য?
-আপনি কি একা একা উঠতে পারবেন নাকি আপনাকে ধরে ধরে উঠাবো?
আমি একা একাই উঠতে পারতাম,তবু মিথ্যা করে বললাম,
-একা একা উঠতে পারবো না,পড়ে যাবো।আপনি ধরে ধরে উঠান।
জলজ্যান্ত একটা মিথ্যা কথা,মিথ্যাটা বলে আমার তেমন অনুশোচনাও হচ্ছিল না, মাঝে মাঝে মিথ্যা কথা আমি বলি।নিরু আমার ডান হাত খুব শক্ত করে ধরে আমাকে উঠালো,নিরুর হাতের নখ আমার হাতে চেপে বসছে,যেনো হাত ছেড়ে দিলেই আমি হুড়মুড় করে পড়ে যাবো!
নিরুর সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিলো চিড়িয়াখানায়।আমি বানরের খাঁচার সামনে দাড়িয়ে বাদাম ছুড়ে ছুড়ে বানরদের খাওয়াচ্ছি, বানর কিচমিচ করে আওয়াজ করছে,মনের মধ্যে বানর পোষার শখ প্রবল হারে উকিঝুকি মারছে।হঠাত খেয়াল করলাম কাছেই কে যেনো মিহি স্বরে ঝুলন্ত একটা বানরের সাথে গল্প করছে।সাধাসিধা একটা মেয়ে,নীল রং এর সুতির শাড়ি পড়া,আমি মেয়েটার পিছে যেয়ে দাড়ালাম।
-আপনি বানরের সাথে কথা বলছেন?
মেয়েটা চমকে ঘুরে দাঁড়ালো,চোখেমুখে লজ্জার হাসি।শেষ বিকেলের রোদ পড়েছে মেয়েটার মুখে,কপালের ঠিক মাঝখানে ছোট্ট একটা নীল টিপ,সেই মুহূর্তে মেয়েটাকে আমার অরিন বলে ভুল হলো।আমি চোখ সরিয়ে নিয়ে হাটা শুরু করলাম কিছু না বলে।মাথায় জ্বরের রোগীর মতো ঘোর ঘোর ভাব,প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে,এলোমেলো পা ফেলছি।পকেট হাতড়ে হাতড়ে সিগারেট আর লাইটার বের করে সিগারেট ধরালাম,আর পেছন ফিরে তাকাবো না তাকাবো না করেও তাকালাম,নীল শাড়ি পড়া মেয়েটি আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো আবার উল্টো দিকে হেটে তার পাশে যেয়ে দাড়ালাম।
-আপনি হঠাত এরকম করে চলে যেয়ে আবার ফিরে এলেন কেনো?আপনাকে অসুস্থ লাগছে।কি হয়েছে আপনার?
আমি হেসে মেয়েটির দিকে তাকালাম।
-কিছু হয় নি।আপনাকে আমার খুব পরিচিত একজনের মতো লাগছিলো,তাই চমকে গেছিলাম।যার মতো লাগছিলো তার কথা আমি আর কখনোই ভাবতে চাই না,তবু তার কথাই আমার বারবার মনে হয়।
মেয়েটার মুখে দুঃখ দুঃখ একটা ভাব ফুটে উঠলো,কিন্তু এই নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন সে করলো না।সে হয়তো কিছু বুঝতে পেরেছে,কিছু না বলতেই অনেক কিছু বুঝে ফেলা মেয়েদের স্বভাবের একটা অংশ।
-আমি এখানে প্রায়ই আসি,জানেন?
-কেনো?বানরের সাথে কথা বলতে?
বলেই আমি হো হো করে হেসে ফেললাম।হায়নার মতো হাসি।অরিন আমার এই হাসির নাম দিয়েছিলো 'হায়না হাসি'!দেখলেই বলতো, "এরকম হায়নার মতো করে হাসছো কেনো?" হায়নার হাসি সে কোথায় দেখলো এর উত্তর অবশ্য তার কাছে কখনো পাই নি।
মেয়েটি অত্যন্ত লজ্জিত ভাবে মাথা নিচু করে দাঁড়িয় আছে।অন্য যেকোনো মেয়ে হলে রাগী রাগী চোখে তাকিয়ে থাকতো,আমি যেটা করছি সেটা একধরনের অভদ্রতা।কিন্তু এ রাগছে না,লজ্জা পাচ্ছে,প্রচন্ড লজ্জা পাচ্ছে। আমার মনে হলো এই শান্তশিষ্ট মেয়েটি রাগ করতে জানে না,এ কোনোদিন রাগী চোখ নিয়ে কারো দিকে তাকায় নি,এর বিশাল বড়ো বড়ো চোখে মায়ার বাসা,এই কি সেই নাটোরের বনলতা?
-আমার হাসি রোগ আছে,হুটহাট হেসে ফেলা আমার খুব বাজে একটা অভ্যাস,এরকম করে এই বিষয়টা নিয়ে হাসাহাসি করা আমার অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে,আপনি না চাইলে আমাকে ক্ষমা করার দরকার নেই।
-না না।ঠিক আছে।হাসা তো ভালো।মন ভালো থাকে।
-কিছু মনে না করলে আপনি কি বাইরে যেয়ে আমার সাথে এক কাপ চা খাবেন?
আমি ভেবেছিলাম মেয়েটি আসবে না,অপরিচিত,অচেনা মানুষের সাথে সে চা কেনো খাবে?কিন্তু আমাকে ভুল প্রমানিত করে সে আমার সাথে টুকটুক করে হাঁটতে লাগলো।
-এই খাঁচায় বন্দী পশুপাখি গুলো যেমন এদের সীমার বাইরে কিছু করতে পারে না,মানুষও সেরকম তাদের সীমার বাইরে কিছু করতে পারে না।আমরা কোনো দৃশ্যমান খাচায় নেই,কিন্তু সবাই তার তার সীমার এক অদৃশ্য খাঁচায় বন্দী আছি।এই সীমা অতিক্রম করলে হয়তো আমরা ভালো থাকবো নয়তো খারাপ থাকবো,আমরা জানি না।এই কারনে এদের আমার খুব আপন লাগে,এদের খাঁচার সামনে দাড়িয়ে নিজের কথা বলি,আমার কথা বলার তেমন কেউ নেই।
একটানা কথা বলে মেয়েটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো।আমি মেয়েটির দুঃখ বোঝার চেষ্টা করলাম,পারলাম না।আমি চুপচাপ এই দুঃখী আধপাগল দার্শনিক মেয়েটার কথা শুনতে শুনতে চায়ে চুমুক দিলাম।সূর্য ডুবে যাচ্ছে,স্নিগ্ধ পরিবেশ।
-আমি আসি,সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
-আচ্ছা আসুন।
অদ্ভুত মেয়েটা হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে,তার নাম জানা হলো না,আর কখনো দেখা হবে না তার সাথে ভেবেই অদ্ভুত শূন্যতা লাগছে মনে,অরিনও এভাবে চলে গিয়েছিলো।আমি জোরে জোরে পা ফেলে হাটতে লাগলাম
-এই যে শুনুন,আপনার নাম কি?
মেয়েটি হাসলো সুন্দর করে।
-আবার যদি আপনার সাথে কখনো দেখা হয় তবে বলবো।আপনি কি জানেন আপনার হাসি খুব সুন্দর।ভোরের আলোর মতো,এপাশ ওপাশ স্বচ্ছ।
বলেই মেয়েটি চলে গেলো।আমি তাকিয়ে থাকলাম।
মেয়েটির সাথে আমার আবার দেখা হয়েছিলো ঠিক বাইশ দিন পরে।আমি এই বাইশ দিনের প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চিড়িয়াখানায় যেতাম,বানরের খাচার সামনে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতাম।আমাকে দেখতেও এই খাঁচায় বন্দী পশুগুলোর মতোই লাগতো,মুখ ভর্তি দাড়ি গোঁফ,গা দিয়ে বোটকা গন্ধও বের হতো।হামহুম শব্দ করে খেতাম,ঘোতঘোত করে গা দুলিয়ে দুলিয়ে হাসতাম,বিশাল বিশাল হাই তুলে রাতের বেলা ভোসভোস করে ঘুমাতাম।
মেয়েটি সেদিন কচুপাতা রং শাড়ি পড়েছিলো, কিশোরীর মতো লাগছিলো।তাকে দেখতে পেয়ে আমি আমার ঝোলার মতো ব্যাগ থেকে বডি স্প্রে বের করে সবটুকু গায়ে দিলাম।চারদিক ম ম করতে লাগলো গন্ধে।মেয়েটির পেছনে যেয়ে তাকে হালুম বলে চমকে দিলে কেমন হয়?
সেদিন নিরু আমাকে প্রথমে সেলুনে নিয়ে গিয়েছিলো,কয়েকদিনের পশুর খোলস থেকে আমি মানুষ হচ্ছিলাম ধীরে ধীরে।খুজে খুজে নিরু আমাকে পাঞ্জাবী পছন্দ করে দিলো।আমি হাতে করে পাঞ্জাবী,রিন হোয়াইট পাউডার,গা ঘসার জালের মতো বস্তু এবং 'ডাভ' সাবান হাতে বাসায় ফিরলাম।
এই মুহূর্তে নিরু আমাকে ধরে ধরে রিক্সায় ওঠাচ্ছে,আমিও নিরুর সাহায্য ছাড়া চলতে পারবো না টাইপ ভাব দেখাচ্ছি।নিরুর হাত ধরে থাকতে আমার বেশ লাগছে।রিক্সায় উঠেও নিরু আমার ডান বাহু শক্ত করে আকড়ে ধরে রাখলো।
বাম হাত ভালোমতো মচকে গেছে,ডাক্তার হাত ঝুলিয়ে দিলো,ডান কাধে তিনটা সেলাই লাগলো,ভ্রুর কাটাতে ব্যান্ডেজ।এক মুহুর্তের জন্যও নিরু আমাকে ছেড়ে যায় নি।প্রেসক্রিপশন,ওষুধ পত্র নিয়ে আমি আর নিরু ধীরে ধীরে হাটছি,আমার ডান হাত নিরুর হাতের মধ্যে।
-নিরু,আপনার সাথে আমার এরকম হুটহাট করে কি করে দেখা হয়ে যায় বলতে পারেন?
-হ্যা,বলতে পারি কিন্তু বলবো না।সব কথা বলার কি দরকার?
-আপনি কি না বলতেই অনেক কিছু বোঝেন?
নিরু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।তার গায়ে হালকা বেগুনী রং এর শাড়ি,খোলা চুল বাতাসে উড়ছে।বড়ো বড়ো চোখ দুটিতে মায়া ছাড়াও আরো কিছু আছে,আধো আলো অন্ধকারে আমি ভালোমত বুঝতে পারছি না।
-আপনি কি একা একা বাসায় ফিরতে পারবেন?
একবার মনে হলো বলি, "না পারবো না, আপনি কি আমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে আসতে পারবেন? "
কিন্তু আমি মুখে বললাম, "হ্যা,পারবো।"
-আচ্ছা তাহলে আমি আসি।
-এক কাপ চা খেয়ে গেলে আপনার কি খুব দেরী হবে,নিরু?চায়ের সাথে সিঙ্গারা?
-হ্যা,একটু দেরী হবে,আজকে আমাকে দেখতে আসার কথা,মামীকে বলে এসেছি আধাঘন্টার মধ্যে ফিরবো,সেখানে অনেকক্ষন হয়ে গেলো।
নিরু কি কাদছে?চোখে কি পানি জমে আছে?কান্না চাপার দমকে শরীর কাপছে?আমি কিছুই ঠিক করে বুঝতে পারছি না।নিরু আমার ডান হাত ছেড়ে দিয়েছে।
-আপনি কিছু বলবেন,রাশেদ?
আমি চিৎকার করে বলতে চাইলাম, " হ্যাঁ,আমি বলতে চাই,অনেক কথা বলতে চাই,আপনার শোনার মতো সময় আছে?সময় না থাকলেও আপনাকে শুনতে হবে।"
-আপনার বিয়েতে আমাকে দাওয়াত করবেন,নিরু?অনেকদিন বিয়েবাড়িতে খাওয়া হয় না।
বলেই আমি হাসতে লাগলাম,হাসতে হাসতে চোখ পানিতে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে,সেই একদিনের মতো।
নিরু ফিসফিস করে বললো,
-আপনি জানেন,আপনার হাসি খুব সুন্দর?চোখ ফেরানো যায় না।
বলেই নিরু চোখ ফিরিয়ে নিলো,হাঁটছে সামনের দিকে।আমি তাকিয়ে আছি।নিরু আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে,মিলিয়ে যাচ্ছে,আমি দেখতে পাচ্ছি না,আর কখনো দেখবো কি না আমি জানি না।আমি হাসছি,পাগলের মতো হাসছি,সেই আগের একদিনের মতো হাসছি,চোখ ভর্তি হয়ে যাচ্ছে পানিতে।
Comments
Post a Comment